সম্পাদকীয়- জানুয়ারী

- সম্পাদক ভাইয়া

0
26

প্রিয় বন্ধুরা,
নতুন বছরের শুভেচ্ছা নাও। বিদায়ী বছরের শেষ সপ্তাহে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে হিম হয়েছিল পুরোদেশ। নতুন বছরের সূর্যকিরণ কিছুটা উষ্ণ করতে পেরেছে মনে হয় প্রকৃতিকে। অবশ্য এ মাসে আবারো শৈত্যপ্রবাহের আগাম সর্তকতা জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রত্যেক ঋতুরই আলাদা কিছু রং রয়েছে, রয়েছে আলাদা ঢং-ও। শীতের রূপ প্রতিভাত হয় লেপ-কাঁথা আর পিঠাপুলিতে। শীত আসে শিশির ভেজা পায়ে, কুয়াশায় আবৃৃত হয়ে। অতিথি পাখির পাখায় পাখায় শীতের সিম্ফনি বাজে। অতিথি পাখির প্রসঙ্গ যখন এসেই গেল ওদের কথাই না হয় বলি আজ। ওরা আসে অনেক দূর থেকে। সাইবেরিয়া কিংবা ওই রকম হিমশীতল জায়গা থেকে। ওরা আসে ঝাঁক বেঁধে, ওরা আসে একটু উষ্ণতার আশায়। অতিথি পাখিকে পরিযায়ী পাখিও বলে। ওরা যে দেশ থেকে আসে সেখানে এখন তীব্র শীত। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে। গাছপালা বরফে আবৃত। পুকুর ডোবা নদী-নালা সব জমাট বেঁধে গেছে। শীতের তীব্রতা অনুমান করে একটু আগেভাগেই ওরা রওনা হয় অপেক্ষাকৃত উষ্ণ এলাকার খোঁজে। পথে যেতে যেতে হয়তো চোখ জুড়িয়ে যায় সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই ভূখ-ের রূপ দেখে। পর্যটক পাখিরা ঝটপট নেমে আসে বিল হাওড় আর খাল নদীতে। মেতে ওঠে জলকেলিতে। কলকাকলিতে মুখর করে তোলে পুরো শীত মওসুম। শীতের পাখি আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যোগ করে আরেকটি নতুন ব্যঞ্জনা। বাংলাদেশে যত রকম পাখি আছে তার প্রায় এক তৃতীয়াংশই এ দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে না। এদেশের অতিথিপরায়ণ মানুষরা ভালোবেসে তবু নানান সুন্দর সুন্দর নাম রেখেছে এসব পাখিদের। যেমন বালিহাঁস, হাট্টিটি বা তিতির জাল কবুতর, গঙ্গা কৈতর, পান্তামণি লালশির প্রভৃতি। এক সময় মানুষ এসব পাখিদের প্রতি খুব নিষ্ঠুর ছিল। শখ করে কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় পাখি শিকারে নেমে যেত। এখন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রচারণায় প্রকৃতির প্রতি ক্রমেই প্রেম বাড়ছে মানুষের। এখন পাখিপ্রেমীদের বিভিন্ন সংগঠনও রয়েছে। অতিথি পাখিদের নিয়ে তারা নানান গবেষণা করে। যেসব স্পটে অতিথি পাখির সমাগম হয় সেখানে দলবেঁধে ঘুরতে যায় সবাই। তোমাদের এলাকাতেও আছে নাকি এমন কোনো বিল হাওড়, যেখানে অতিথি পাখি আস্তানা গেড়েছে? ঢাকায় কিন্তু আমরা চাইলেই বোটানিক্যাল গার্ডেন কিংবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে পারি রংবেরঙের নানান প্রজাতির অতিথি পাখি।
নতুন বছর আমাদের সবার জন্য কল্যাণ বয়ে বয়ে আনুক এই কামনা করে আজকের চিঠি শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
– সম্পাদক ভাইয়া