অনুষ্ঠিত হলো শিশুকিশোর মাসিক ফুলকুঁড়ির আয়োজনে লেখালেখি কর্মশালা

1
13

ফোনের ওপাশে রিং হচ্ছে। এই বুঝি ধরবে কলটা। নাহ, আবারও নো অ্যান্সার। হতাশ হয়ে সামনে তাকালো আরিব। দেখে, ত্রিশজোড়া উৎসুক চোখ তার দিক তাকিয়ে আছে কিছু শোনার আশায়। কিন্তু নাহ, সুখবর তো নেই।
আসলে হয়েছে কি, অনুষ্ঠানের ভেন্যু খোলার সময় ছিলো সকাল সাড়ে আটটা। অথচ আমরা একাংশ চলে এসেছি আটটা বাজতে না বাজতেই। তাই তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢোকার জন্য ভেন্যু ম্যানেজারকে এতো সকালে কল দিয়ে বিরক্ত করা…।
বলছিলাম, শিশুকিশোর মাসিক ফুলকুঁড়ি আয়োজিত ক্ষুদে লেখিয়েদের নিয়ে লেখালেখি কর্মশালার কথা। গত ১৯ এপ্রিল ঢাকাস্থ ক্ষুদে লেখকবন্ধুদের নিয়ে কর্মশালাটি ঢাকার অদূরে কেরাণীগঞ্জের একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়। মাসিক ফুলকুঁড়ির সহ-সম্পাদক আরিব মাহমুদের পরিচালনায় কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফুলকুঁড়ি আসরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মাসিক ফুলকুঁড়ির উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন আজাদ, ফুলকুঁড়ি আসরের খেলাধুলা ও ব্যায়াম উপদেষ্টা অ্যাড. এ. কে. এম. বদরুদ্দোজা, মাসিক ফুলকুঁড়ির সম্পাদক আহমদ মতিউর রহমান, নির্বাহী সম্পাদক নাঈম আল ইসলাম মাহিন এবং আসরের প্রধান পরিচালক ও মাসিক ফুলকুঁড়ির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। কর্মশালার সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন আসরের সহকারী প্রধান পরিচালক ও মাসিক ফুলকুঁড়ির সহ-সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম।

৫৮জন ক্ষুদে লেখকবন্ধুকে নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালাটি সাজানো ছিলো চারটি কর্মশালা, লেখা আলোচনা, লেখালেখি পর্ব, ধারাবাহিক কবিতা বানানো প্রতিযোগিতা, সুইমিং ও রাইডিংসহ নানান মজাদার আয়োজনে।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্ব ছিলো ধারাবাহিক কবিতা বানানো পর্ব। পর্বটি পরিচালনা করেন মাসিক ফুলকুঁড়ির সম্পাদক আহমদ মতিউর রহমান। এ পর্বে ক্ষুদে লেখকরা সবাই মিলে তাৎক্ষণিক একটি একটি করে লাইন জোড়া লাগিয়ে গেঁথে ফেলে দারুণ দারুণ কবিতা। যেমন-

“আমরা এসেছি আজ, সুন্দর এক গ্রামে,
গার্ডেন রিসোর্ট পার্ক, আছে তার নামে।
যেখানে মাছ ধরে, রাখে বড় বড় ড্রামে,
মাসিক ফুলকুঁড়ি কেনা যায় বেশ অল্প দামে।

বাইরে সুন্দর রোদ, মিঠে-কড়া ভাব,
অকাজে ছিঁড়ো না ফুল, দিতে হবে জবাব।
এই সময়ে খেতে ভালো, সবুজ তাজা ডাব,
প্রকৃতি দেখে দেখে, শুদ্ধ করো স্বভাব।

কবি-কবি ভাব নিয়ে, ফিরে যাবো বাড়ি,
সঙ্গে নেব রসমালাই, আস্ত হাঁড়ি হাঁড়ি।
সেটা নিয়ে বাড়ির সবে, লাগবে কাড়াকাড়ি,
মা তাই লুকিয়ে সেটা রাখবে তাড়াতাড়ি।

আমরা সবাই শিশুকিশোর, বয়সটা দশ-বারো,
এখন থেকে লিখবো সবাই, গল্প-ছড়া আরও।
নতুন নতুন ছড়া বানাও, ছন্দ যত পারো,
মনের মাঝে হাসি ছড়াও, ধার ধরো না কারও।”

দিনব্যাপী হইচই, লেখা, শেখা শেষে বিকেলে ছিলো রাইডিং। কুঁড়িরা মজা নিয়ে উপভোগ করে মজার সব রাইডস।
বেলা গড়িয়ে আসে। পাখি ফিরে আসে নীড়ে। শুধু পাখি নয়, আমাদেরও যে ফিরতে হবে বাসায়। দেরি হলে যে আম্মু বকবে!
আম্মুর বকুনির ভয়েই হোক, কিংবা ঢাকার জ্যামে আটকে থাকার ভয়েই হোক, কুঁড়িরা দলবেঁধে ফিরে যেতে থাকে যার যার গন্তব্যে। সাথে নিয়ে অভিজ্ঞতার ঝুড়ি, এবং লেখক হবার এক দীপ্ত প্রতিজ্ঞা। ০