খেলাধুলার টুকিটাকি

ওয়াহিদ আল হাসান

0
20

পাঠকবন্ধুরা, বিশ^ব্যাপী মহামারি করোনার পাশাপাশি শীতের প্রকোপে সবুজশ্যামল বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা অনেকটা কঠিন সময় পার করছি। মহান আল্লাহর কাছে রহমত কামনা করে এই সংখ্যায় দেশ-বিদেশের কিছু খেলাধুলার খবর নিয়ে হাজির হয়েছি। আশাকরি ভালো লাগবে।

হোয়াটমোরের সেরা টেস্ট একাদশে সাকিব
বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার পেছনে যার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে তিনি ডেভ হোয়াটমোর। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাশরাফি-সাকিবদের কোচ ছিলেন এই শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি। তার অধীনে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে বিদায় করে সেরা আটে পৌঁছায় টাইগাররা। ওই পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পায় স্মরণীয় জয়। হোয়াটমোর বাংলাদেশের কোচ থাকতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটেছিল সাকিব-তামিমদের। ২০০৬ সালের আগস্টে ওয়ানডে দিয়ে অভিষেক হওয়া সাকিবকে প্রায় এক বছরের জন্য দলে পেয়েছিলেন হোয়াটমোর। এসময়ে তার নিবিড় পরিচর্যায় সাকিবরা গড়ে উঠেছেন চৌকস খেলোয়াড় হিসেবে।

১৯৭০ দশকের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান হিসেবে সংক্ষিপ্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষে কোচিংয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন ডেভ হোয়াটমোর। কোচিংয়ের ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। এই ২০ বছরে ৮৭ টেস্ট ও ৩১৫ ওয়ানডেতে কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এসময়ের কোচিং ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা থেকে সম্প্রতি সেরা টেস্ট একাদশ বেছে নিয়েছেন ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপ জেতানো এই সফল কোচ।

দ্যা ক্রিকেট মান্থলি সাময়িকীকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হোয়াটমোর তার দেখা সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে এই টেস্ট স্কোয়াড সাজানোর কথা জানান। তার এই সেরা দলে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাকে অলরাউন্ড পজিশন তথা ৭ নম্বরে ব্যাটিং ও মুত্তিয়া মুরালিধরনের সঙ্গে স্পিন আক্রমণে রাখা হয়েছে।

হোয়াটমোরের এই একাদশে শ্রীলঙ্কা থেকেই স্থান পেয়েছেন ছয়জন। পাকিস্তান থেকে স্থান পেয়েছেন তিনজন। আর বাংলাদেশ থেকে একমাত্র সাকিব আল হাসান। একাদশের অধিনায়ক করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ক্রিকেটার অ্যালান বোর্ডারকে।
সাকিবকে নিয়ে হোয়াটমোর ক্রিকেট মান্থলি সাময়িকীকে বলেন, ‘আমি জানতাম সে দীর্ঘদিন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে। সে যেভাবে ক্রিকেটটা খেলতে চেয়েছে সেটিই এর কারণ। ওয়ানডেতেও ছিল ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দক্ষতা আছে, সময় গড়িয়ে চলার সঙ্গে সে স্পিনার-ব্যাটসম্যান হিসেবে সেরা অলরাউন্ডারও হয়েছে। আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। সে ত্রিমাত্রিক খেলোয়াড় এবং বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার।’

হোয়াটমোরের টেস্ট একাদশ : সনাৎ জয়াসুরিয়া, আজহার আলী, কুমার সাঙ্গাকারা (উইকেটকিপার), অরবিন্দ ডি সিলভা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, অ্যালান বোর্ডার (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, চামিন্ডা ভাস, রডনি হগ, মুত্তিয়া মুরালিধরন, উমর গুল।

সেনেগালের বিশ্বকাপ নায়ক দিওপের মৃত্যু
পুরো নাম পাপা বৌবা দিওপ। সেনেগাল ফুটবল দলের খ্যাতিমান খেলোয়াড়। জাতীয় দলে জার্সি গায়ে ৬০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন এবং প্রতিনিধিত্ব করেছেন একাধিক ইউরোপিয়ান ফুটবল ক্লাবে। তবে সাবেক এই মিডফিল্ডার স্মরণীয় হয়ে আছেন ২০০২ সালের বিশ্বকাপ নায়ক হিসেবে। সম্প্রতি দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগে মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি।
জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপের প্রথম গোল করেন দিওপ। আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে তাদের বিদায়ের পথ দেখান তিনি। ওই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি জিনেদিন জিদানের দল। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা অঘটনের শিকার হয়ে ফ্রান্স পরের দুই ম্যাচে উরুগুয়ের সঙ্গে ড্র ও ডেনমার্কের কাছে হেরে ছিটকে যায়।

আর প্রথম ম্যাচে সেনেগাল সবাইকে অবাক করে উরুগুয়ের সঙ্গে করে ৩-৩ গোলের ড্র। ওই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন দিওপ। বিশ্বকে বিস্মিত করে ওই বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে সুইডেনকে হারিয়ে প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে সেনেগাল।
সব মিলিয়ে সেনগালের হয়ে ৬৩ ম্যাচ খেলে ১১ গোল করেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ফুলহ্যাম ছাড়াও পোর্টসমাউথ, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ও বার্মিংহ্যাম সিটির মতো ইংলিশ ক্লাবে খেলেছেন দিওপ।
দ্রুততম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির রেকর্ড ফিলিপসের
ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। কিন্তু উদযাপনের উপলক্ষ্যটা আরও বড়। নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মাত্র ৪৬ বলে মাউন্ট ম্যাঙ্গানিউতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ফিলিপস।
ওশানে থমাসের লেন্থ বল কাট করে ডিপ পয়েন্টে পাঠালেন গ্লেন ফিলিপস। দৌড়ে প্রান্ত বদলের সঙ্গে সঙ্গে ফিলিপসের গগনবিদারী চিৎকার। ৯৯ থেকে ফিলিপস পৌঁছে যান তিন অঙ্কে।
একই মাঠে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২০১৮ সালে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন কলিন মুনরো। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ৪৭ বলে। এ সংস্করণে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি ডেভিড মিলারের দখলে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ‘কিলার’ মিলার।
ব্যাটিংয়ে চার নম্বরে নেমেছিলেন ফিলিপস। মার্টিন গাপটিল (৩৪) ও সেইফার্ট (১৮) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। সপ্তম ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি পাওয়া শুধু কঠিনই নয় প্রায় অসম্ভব কাজ। কিন্তু অসম্ভব কাজ খুব সহজে করে দেখিয়েছেন ফিলিপস। ২২ বলে ছুঁঁয়েছিলেন ফিফটি। পরের ২৪ বলে পেয়েছেন শতরান। সব মিলিয়ে ৫১ বলে ১০ চার ও ৮ ছক্কায় ফিলিপস করেন ১০৮ রান। কনওয়ের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ৬৫ রান।
তৃতীয় উইকেটে ফিলিপস ও কনওয়ে ১৮৪ রানের জুটি গড়েন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে যা যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০১৬ সালে মার্টিন গাপটিল ও কেন উইলিয়ামস ১৭১ রানের জুটি গড়েছিলেন। এছাড়া এ সংস্করণে যেকোনো উইকেটে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি। প্রথম তিনটি জুটি হজরত উল্লাহ জাজাই ও উসমান গনি (২৩৬), অ্যারন ফিঞ্চ ও ডার্চি শর্ট (২২৩) ও কাইল কোয়েটজের ও জর্জ মুনসের (২০০)।
দুই ব্যাটসম্যানের আগ্রাসনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩ উইকেটে ২৩৮ রান করে স্বাগতিকরা। অতিথিরা ভালো করতে পারেননি। ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৬৬ রান।