হোসনা বানুর অ্যাডভেঞ্চার । পর্ব-৭

আহমাদ স্বাধীন

0
9
জাদুর পাহাড়ে হোসনা বানু

হোসনা বানু যাবে জাদুর পাহাড়ে। অনেক দুর্গম পথ, হিমালয়, জঙ্গল পেরিয়ে এসেছে সে। ওই যে দেখা যায় জাদুর পাহাড়। ওখানে পৌঁছতে পারলেই পেয়ে যাবে সোনালি রঙের মধু ঝরনার জল। সেই জল নিয়ে যেতে পারলেই ভালো হয়ে যাবে মায়ের অন্ধ চোখ। হোসনা বানুর মা অপেক্ষা করছে মেয়ের জন্য। অপেক্ষা করছে লুলুশিয়া গ্রামের সবাই। জাদুর পাহাড়ের চূড়া এখান থেকে দেখা গেলেও সেটা অতটা কাছে নয়। যতটা কাছে মনে হচ্ছে। ক্লান্ত দুর্বল শরীর নিয়েও হোসনা বানু কিছুটা পথ হাঁটলো ওর ইচ্ছে শক্তির জোরে। কিন্তু এখন আর পারছে না। পা দুটো অসাড় হয়ে আসছে। তৃষ্ণায় জিহবা গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। আর চলতে না পেরে পথের ধারেই বসে পড়লো হোসনা বানু। পথের পাশে লম্বা একটা নারকেল গাছ। নারকেল গাছের ডাবের ছড়ায় খেলা করছিলো দুটো ইঁদুর ছানা। খেলার ছলে ওরা ডাবের ছড়া থেকে কুটকুট করে দুটো ডাব কেটে দিলো। একটুর জন্য ডাব দুটো হোসনা বানুর মাথায় পড়লা না। নিচে বালু থাকায় ডাব দুটো ফেটেও গেলো না। প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হোসনা বানু ওর পোঁটলা থেকে ছোরাটা বের করলো। ডাব দুটো কাটলো আর খেয়ে নিলো তার সবটুকু পানি। ডাব দু টুকরো করে কেটে ভেতরের নরম নারকেলসহ খেয়ে নিলো হোসনা বানু। এতোক্ষণে শরীরে শক্তি ফিরে এলো ওর। হোসনা বানু স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চলতে শুরু করলো আবার। এই পথটা বেশ সরল আর সুন্দর। তাই হাঁটতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে বেশিক্ষণ চলতে পারলো না। হঠাৎ করেই একটা ভয়ানক বিপদের মুখে পড়লো হোসনা বানু। এই বিপদের জন্য মেয়েটা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।

একঝাঁক ইঁদুর এসে তুলে নিলো ওকে। ইঁদুরগুলো সাধারণ কোনো ইঁদুর নয়। এক একটা বড়ো মাপের বানরের মতো ইঁদুর। আর কী শক্তি ওদের! মাত্র চারটা ইঁদুর হোসনা বানুকে ধরে কাঁধে তুলে নিলো। কী সাংঘাতিক ব্যাপার! এই বিশাল আকৃতির ইঁদুরগুলো কোথা থেকে আসলো? ভাবছে হোসনা বানু। এসময় সামনে পেছনে আরো আটটা ইঁদুর ওকে ঘিরে দাঁড়ালো। তারপর এক দৌড়ে ওকে নিয়ে গেল একটা ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত বাড়িতে। এতো বড়ো ইঁদুর এর আগে হোসনা বানু কখনো দেখেনি। সেই ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত বাড়িটাতে গিয়ে নামানো হলো ওকে। এখানে এসে আরো অবাক হলো হোসনা বানু। প্রকাণ্ড এক ইঁদুর বসে আছে একটা চেয়ারে। ছোটখাটো একটা ভালুকের সমান এই ইঁদুর। কী অদ্ভুত! মনে হচ্ছে এটাই সব ইঁদুরের সর্দার। এখানে আরো নানা ধরনের ইঁদুর বসে আছে। লম্বা ইঁদুর, বেটে ইঁদুর, সাদা ইঁদুর, কালো ইঁদুর, লাল, কমলা, নীল রঙের ইঁদুর। আরো অদ্ভুত রকম দেখতে অনেক ইঁদুর। নিঃসন্দেহে বলা যায় এটা একটা ইঁদুরের রাজ্য। হোসনা বানুকে আসামির মতো দাঁড় করানো হলো ইঁদুর সর্দারের সামনে। গোঁফওয়ালা একটা ইঁদুর বললো, মান্যবর সর্দারের সামনে অপরাধীর অভিযোগ শোনানো হোক। কুঁজো একটা ইঁদুর এগিয়ে এলো। এসে ওদের ইঁদুর সর্দারকে কুর্নিশ করে অভিযোগ শোনাতে লাগলো। এই মেয়েটার অপরাধ খুব গুরুতর। ও আমাদের গাছের দুই দুইটা ডাব খেয়েছে। শুধু ডাবের জল খায়নি, ডাবের ভেতরের সাদা নারকেলসহ খেয়ে নিয়েছে মেয়েটি। যে কারণে ওর শাস্তি দেয়া দরকার মান্যবর সর্দার। আমাদের রাজ্যে এসে আমাদের অনুমতি ছাড়া দুই দুইটা নারকেলসহ ডাব খাওয়ার অপরাধে অবশ্যই আমি ওর কঠিন শাস্তি দাবি করছি মান্যবর। অবশ্যই শাস্তি দেবো আমি। দুইটা ডাব খাওয়ার জন্য ওকে দুইবার শাস্তি পেতে হবে। দুইবার জেল হবে ওর। দুইবার ফাঁসি হবে। আর দুইবার মরতে হবে। বললো ইঁদুর সর্দার।

এসময় একটা মোটা ইঁদুর দৌড়ে এসে বললো, সর্বনাশ হয়ে গেছে সর্দার। আমাদের ছোট সর্দারকে সাপে কামড়েছে। শীঘ্রই আসুন। দেখবেন কী অবস্থা হয়েছে ওর। ইঁদুর সর্দার উঠে গেলো। ভাঙাচোরা বাড়িটার ভেতরে গিয়ে দেখলো তার ছেলের খুব করুণ অবস্থা। সাপের কামড়ে নীল হয়ে গেছে শরীর। এখনও মারা যায়নি। তবে আর বেশিক্ষণ বাঁচবে বলে মনে হয় না। ইঁদুর সর্দার কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। চারপাশে আরো অনেক ইঁদুর। সবাই হা হুতাশ করছে। হোসনা বানুও সর্দারের পিছু পিছু এলো। এসে ওর পোঁটলা থেকে বের করলো একটা নীল রঙের পাতা। মায়া খরগোশের দেয়া দুটো পাতা থেকে একটা পাতা খেয়েছিলো ও নিজে। আর একটা রয়ে গেছে ওর কাছে। এখন সেটাই কাজে লাগাতে হবে। হোসনা বানু পাতাটি বের করে ইঁদুর সর্দারের ছেলের মুখে দিলো। বললো, এটা খেয়ে নাও। তাহলেই সুস্থ হয়ে যাবে তুমি। ইঁদুর সর্দার ও অন্যান্য ইঁদুরগুলো অবাক হয়ে একে অন্যের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। ততক্ষণে সর্প বিষের জম নীলপাতা খেয়ে সুস্থ হয়ে গেছে ইঁদুর সর্দারের ছেলে ছোট সর্দার। নীল শরীর ঠিক হয়ে আবার হয়ে গেছে আগের মতো। ওকে উঠে বসতে দেখে তো ইঁদুর সর্দারসহ সবাই অবাক। ইঁদুর সর্দার বললো,  এই ছোট্ট মেয়ে।  তুমি তো আমার ছেলেকে বাঁচিয়ে দিলে। তুমি কী জাদু করতে জানো? হোসনা বানু বললো, না সর্দার। আমি কোনো জাদু করতে জানি না। আমি তো শুধু সর্প বিষের জম নীলপাতা খাইয়ে আপনার ছেলেকে সুস্থ করলাম। যা আমাকে দিয়েছিলো রক্ত নদীর ওপাড়ের মায়া খরগোশ।

আমার নাম হোসনা বানু। আমাকে যেতে হবে জাদুর পাহাড়ে। সেখান থেকে আনতে হবে মধু ঝরনার পানি আমার মায়ের অন্ধ চোখ ভালো হয়ে যাবে তাহলে। আমি এসেছি অনেক দূরের গ্রাম লুলুশিয়া থেকে। খুব ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় আমি তোমাদের গাছের ডাব খেয়েছি। আমি জানি যে কারো কোনো জিনিস না বলে নেওয়া বা খাওয়া অন্যায়। কিন্তু সে মুহূর্তে আমার কিছু করার ছিলো না। আমি খুবই দুঃখিত তোমাদের গাছের ডাব না বলে খাওয়ার জন্য।

সর্দার বললো, তোমাকে দুঃখিত বলতে হবে না ছোট্ট ভালো মেয়ে। তোমার শাস্তি মওকুফ করা হলো। তুমি আমার ছেলেকে বাঁচিয়ে ভবিষ্যৎ সর্দারকেই বাঁচিয়েছো। তাই তোমাকে জাদুর পাহাড়ের চূড়ায় যেতে সাহায্য করবো আমরা। ইঁদুর সর্দার তার পাশে দাঁড়ানো একটা লম্বা ইঁদুরকে বললো, শীঘ্রই ওর জন্য একজোড়া বিশেষ জুতা তৈরি করো। যেটা পায়ে দিয়ে হোসনা বানু খুব সহজেই যেতে পারে জাদুর পাহাড়ে। ততক্ষণে তুমি আমার ভেতর বাড়িতে বিশ্রাম করো ছোট্ট ভালো মেয়ে। বিশেষ সম্মানের সাথে ভেতরের ঘরে নিয়ে বসানো হলো হোসনা বানুকে। অনেক যত্নের সাথে আপ্যায়ন করা হলো। খেতে দেয়া হলো নানা ধরনের ফলমূল ও কচি ডাবের জল। ইঁদুর সর্দারের অনুরোধে সেইদিন এবং একটা রাত অতিথি হয়ে কাটাতে হলো হোসনা বানুকে। এতোদিনের ক্লান্তি ক্ষুধা তৃষ্ণা সব ঘুচে গেলো। মাত্র এক রাতের আরাম ও আপ্যায়নে হোসনা বানু একদম তাজা ফুরফুরে হয়ে গেলো। পরের দিন সকালে যাওয়ার সময় হলো ওর। তখন ইঁদুর সর্দার ওর জন্য নিয়ে এলো বিশেষ এক জোড়া জুতো। যে জুতোর তলা বানানো হয়েছে বিশেষ ধরনের হাড় দিয়ে। যা কখনো ভাঙবে না। উপরের অংশে দেয়া হয়েছে ইঁদুরের পশম। যা ভীষণ মোলায়েম ও সুন্দর।

এ জুতো পায়ে দিয়ে উঁচু নিচু, টিলা পাহাড় জঙ্গল যেকোনো ধরনের পথেই চলা যায় অনায়াসে। খাড়া পাহাড়, উঁচু দেয়াল সব কিছুতেই চড়া যায় এ জুতো পায়ে দিয়ে। আর পৌঁছে যাওয়া যায় খুব দ্রুত। এই বিশেষ জুতোজোড়া দিয়ে ইঁদুর সর্দার অন্যান্য ইঁদুরদের সাথে নিয়ে বিদায় জানালো হোসনা বানুকে। হোসনা বানুও সকল ইঁদুরকে ধন্যবা জানিয়ে বিদায় নিলো। এবং হাঁটতে থাকলো জাদুর পাহাড়ের দিকে। জাদুর পাহাড় অনেক দূরে। অনেক উঁচু তার চূড়া। দেখা যায় অনেক দূর থেকেও। অবশেষে হোসনা বানু সেই দূরের পাহাড়েও পৌঁছে গেলো। ইঁদুরের দেয়া জুতো জোড়া পায়ে থাকায় তেমন কোনো কষ্ট হলো না হোসনা বানুর। খুব দ্রুত পৌঁছে গেলো পাহাড়ের কাছে। নীল রঙের পাহাড় এটা। কী সুন্দর দেখতে! হোসনা বানু মুগ্ধ হয়ে দেখে তার কাক্সিক্ষত পাহাড়কে। এই পাহাড়েই আছে মধু ঝরনা। এই মধু ঝরনার সোনালি পানিতেই আছে তার মায়ের অন্ধ চোখের আলো। ভীষণ খাড়া পাহাড় এই জাদুর পাহাড়। ঝরনার পানির জন্য পাহাড়ের চূড়ায় যেতে হবে। পাহাড়ের চূড়া বেয়ে ঝরনার পানি নিচে নামার আগেই বাষ্প হয়ে মিশে যায় বাতাসে। তাই চূড়ায় যাওয়া ছাড়া গতি নেই। এই পাহাড় বেয়ে ওঠা সাধারণ কারো পক্ষে অসম্ভব। হোসনা বানুর পায়ে পাহাড় বেয়ে ওঠার বিশেষ জুতো আছে। তাই ওর জন্য অসম্ভব নয়। হোসনা বানু পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। ওর পায়ে বিশেষ এই জুতো থাকার পরেও কাজটা সহজ হয় না। অনেক কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত হোসনা বানু উঠে যায় পাহাড়ের চূড়ায়। জাদুর পাহাড়ের মধু ঝরনা এখন হোসনা বানুর সামনে। জাদুর পাহাড়ের চূড়া এতোই উঁচুতে যে এখান থেকে মেঘ ধরা যায়। নানা রঙের মেঘের ভেলা জাদুর পাহাড়কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে উড়ে যায়। কোথায় যায় মেঘের দল? হোসনা বানু তা জানে না। কে জানে? তাও জানে না। নরম নরম তুলতুলে মেঘের গায়ে হাত বুলায় হোসনা বানু। ভীষণ ভালো লাগে ওর। তারপর এগিয়ে যায় মধু ঝরনার দিকে। হোসনা বানু ওর পোঁটলা থেকে পানির পাত্র বের করে। ওটাকে পরিপূর্ণ করে ভরে নেয় মধু ঝরনার সোনালি পানিতে। কিছুটা পানি ও নিজেও খেয়ে নেয়। আর অবাক করা এক ভালো লাগার অনুভূতিতে ভরে যায় ওর মন। শরীর হয়ে ওঠে প্রফুল্ল। সমস্ত কষ্ট-ক্লান্তি কোথায় যেন উবে যায় নিমেষেই। অনুভূত হয় কেবল আরাম আর প্রশান্তি। এখন ওকে ফিরতে হবে। মায়ের জন্য ভীষণ আকুল হয়ে আছে ওর মন। ওদিকে মা এবং লুলুশিয়া গ্রামের সবাই আছে ওর অপেক্ষায়। দীর্ঘদিনের কঠিন পথ পেরিয়ে ও এসেছে এই জাদুর পাহাড়ে। এখন ফেরার সময়। কিন্তু ফেরার জন্য আবার সেই দীর্ঘপথ চলার ইচ্ছে হলো না ওর। ভাবতে লাগলো সহজ কোনো উপায়। মেঘেদের দিকে চোখ পড়লো ওর। মাথায় এলো নতুন বুদ্ধি। একটা মাঝারি আকারের সাদা মেঘ আটকে গেছে জাদুর পাহাড়ের চূড়ায়। হোসনা বানু ওর কাছে গেলো। বেশ একটু জোরে ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে দিলো মেঘটাকে। সাদা মেঘের টুকরোটাকে সাহায্য করার জন্য খুশি হয়ে জানতে চাইলো হোসনা বানুর কাছে ওর নাম পরিচয় ও এখানে আসার কারণ। হোসনা বানু শুরু থেকে এ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব ঘটনা ও এখানে আসার কারণ জানালো সাদা মেঘটাকে। সাদা মেঘ বললো, চিন্তা করো না ছোট্ট ভালো মেয়ে। আমি তোমায় সাহায্য করবো। তুমি আমার পিঠে উঠে বসো। আমি তোমায় নিয়ে যাবো তোমার গাঁয়ে। হোসনা বানু মেঘের কাছ থেকে এই কথাটা শোনার অপেক্ষাতেই ছিলো। সাথে সাথে উঠে বসলো সাদা মেঘের পিঠে। সাদা মেঘ ওকে উড়িয়ে নিয়ে চললো আকাশের নিচ দিয়ে। হোসনা বানু নিচে তাকিয়ে দেখলো সে পেরিয়ে যাচ্ছে সাপের গুহা, রক্ত নদী আগুনমুখো ডাইনোসরের জঙ্গলসহ চেনা অচেনা অনেক পথ। হোসনা বানু মেঘের পিঠে চড়ে উড়তেই থাকলো। এভাবে উড়তে উড়তে কত সময় যে কাটলো সে হিসেব কেউ রাখলো না। এক সময় এসে নামলো ওর প্রিয় গোলাপ বাগানে। সাদা মেঘের টুকরোটাকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় জানালো হোসনা বানু। তারপর গেলো মায়ের কাছে। মা মেয়েকে পেয়ে আনন্দে জড়িয়ে ধরলো। হোসনা বানু জাদুর পাহাড়ের মধু ঝরনার পানি বের করে লাগিয়ে দিলো মায়ের অন্ধ চোখে। সাথে সাথে ভালো হয়ে গেলো মায়ের চোখ। তারপর ডাকলো গাঁয়ের যতো অসুস্থ লোকজন আছে তাদের। তারা এলে একে একে তাদেরও দিলো মধু ঝরনার পানি। লুলুশিয়া গ্রামের কেউ আর অসুস্থ রইলো না। হোসনা বানু মধু ঝরনার বাকি পানিটুকু দিয়ে দিলো সেই বদ্যি দাদুকে। যিনি বলে দিয়েছিলেন জাদুর পাহাড়ের পথ। এই পানিটুকু দিয়ে তিনি আরও অনেকের চিকিৎসা করতে পারবেন।

হোসনা বানু এখন ভীষণ খুশি। খুশি গ্রামের সবাই। মধু ঝরনার পানি নিয়ে হোসনা বানুর ফিরে আসায় সবার মনে আনন্দ। আরও আনন্দ যোগ হলো সকলের সুস্থতায়। গ্রাম জুড়ে শুরু হলো উৎসব। এ উৎসব চললো বিরতিহীনভাবে অনেকদিন। এখানেই শেষ হলো হোসনা বানুর জাদুর পাহাড় বিজয়ের গল্প।

তবে মূল গল্পের শেষ হয়নি কিন্তু। হঠাৎ ঘটলো আরও একটি নতুন ঘটনা। লুলুশিয়া গ্রাম থেকে হারিয়ে গেলো বেশ কয়েকজন বাচ্চা ছেলেমেয়ে। যাদের মধ্যে কজন ছিলো হোসনা বানুর খেলার সাথি। কোথায় গেলো, কী হলো তা কেউ বলতে পারলো না। ওদের জন্য লুলুশিয়া গ্রামে আবার শুরু হলো শোক আর কান্না। এ কান্না আর শোক কাটাতে হলে খুঁজে বের করতে হবে হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাদের। যা করার জন্য হোসনা বানুকে শুরু করতে হবে নতুন কোনো অভিযান। সেই অভিযানের সঙ্গী হতে হলে তোমাকে যেতে হবে পরের পর্বে। (চলবে..)