দুষ্টু পাখি

মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ

0
66

মধ্য এশিয়ার একটি শহর। নাম বলখ।
শহরে ছিল এক ধনী লোক। তার ছিল একটি সুন্দর ফুল ও ফলের বাগান। নজর কাড়ার মতো। সেই বাগানে ফুটত হরেক রকম ফুল। ফলত সুস্বাদু ফল।

একদিন এক দুষ্টু পাখি কোথা থেকে এসে বাগানের যত কাঁচাপাকা ফল ছিল সব একটা একটা করে ঠুকড়ে ঠুকড়ে মাটিতে ফেলতে লাগলো।

বাগানের মালী দুষ্টু পাখিটাকে যে কিভাবে তাড়াবে পথ খুঁজে পাচ্ছিল না। অবশেষে ফাঁদ পাতলো। দুষ্টু পাখি ফুড়–ৎ করে উড়ে এসেই ফাঁদে আটকা পড়ল।
ঝোপের আড়াল থেকে মালী বের হয়ে খপাৎ করে পাখিটার গলা টিপে ধরলো।

পাখি মালীর দিকে মিট মিট চোখে তাকায়। বলে, তুমি খুব চালাক। আমাকে মারবে মারো। তোমার ইচ্ছে পূরণ হোক।
মালী বলল, তোর যা বলার বল। মৃত্যু যখন নিশ্চিত ওসব বলে লাভ নেই।

দুষ্টু পাখি বলে, মারার আগে আমার কয়েকটি কথা শোনো। আচ্ছা, এখান থেকে দিগন্ত জোড়া পশ্চিমে গেলে দেখবে একটি বিশাল মাঠ। ওখানে আছে একটি মরূদ্যান। একদিন ওই মরূদ্যানে বসে আছি। দেখলাম কাঠঠোকড়া আর বুলবুলি একটি ফড়িং ধরার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে। বুলবুলির জয় হলো। কিন্তু কাঠঠোকড়া ছোঁ মেরে বুলবুলির ঠোঁট থেকে ফড়িংটা ছিনিয়ে নিলো।
বুলবুলি বলল, অন্য পাখিদের মুখে তোমাদের কথা শুনেছি। তোমরাই নাকি বাদশাহ সোলায়মান আ: কে ‘সেরা শহরের’ খবর দিয়েছিলে? তাতে তোমরা বাদশাহ থেকে কী পেলে?

তিনটি পুরস্কার পেয়েছি। মাটির কত নিচে পানি আছে বলতে পারি, মাথার সুন্দর ঝুটি, কোন ফল কি রকম হয়।

আমি কাঠঠোকড়ার মুখ থেকে সেদিন এই বাগানের কথাও শুনেছি। বলছে, এই বাগানের সব ফল বিষাক্ত হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি উড়ে আসলাম। ভাবলাম, ছোট ছেলে মেয়ে খেলে তো বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই ঠুকড়ে ঠুকড়ে ফলগুলো ফেলছিলাম। তাহলে উপকারী বন্ধুকে কেমনে মারবে? পাখির কথা শুনে মালী দুষ্টু পাখিটাকে ছেড়ে দিলো। ডানা ঝাপটে পাখি গাছের ডালে গিয়ে বসল। বলল, মূর্খ মালী এসব আমার মিথ্যে কথা। মালীর চোখ তো ছানাবড়া…!