গুপ্তধন (পর্ব-৮)

নাঈম আল ইসলাম মাহিন

0
95

(গত সংখ্যার পর)

আট

জিন্সের প্যান্ট কেডস আর ক্যাপ পরা মেয়ে দুটোকে দূর থেকে ছেলেই মনে হচ্ছে। দুটো মেয়েকে নিয়ে দুজন ছেলের জঙ্গলে প্রবেশের এমনিতেই অন্য মিনিং রয়েছে। তাই এই বেশভূষা। চারজন মিলে বাঁধের ওপর বসে এমনভাবে গল্প করছে যেন পৌষের ভোরে পদ্মার শান্তরূপ দর্শনে এসে বিমোহিত চার বন্ধু। সাইকেল দুটি নলখাগড়ার ঝোপে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে চট করে নেমে গেল কুসুম মাঝখানের জলাভূমিতে। মুহূর্তের মধ্যেই জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে গেল। খুব ভালো করে কেউ খেয়াল না করলে মনে হবে তিনজনই বুঝি গল্প করছে অনেকক্ষণ ধরে বাঁধের ওপর। দ্বিতীয়বারে নামলো এষা তারপর সাজিদ। ওদেরকে কেউ অনুসরণ করছে না এটা নিশ্চিত হয়ে সবশেষে নামলো ইফতু।

বেশ কয়েক দিন কেউ হাঁটাহাঁটি করেনি বলে পায়ে চলা পথটা অনেকটাই বিলীন হয়ে গেছে। চারজনের চেহারাই ঝলমল করছে। উচ্ছ্বাস উত্তেজনা আনন্দ আর অ্যাডভেঞ্চারের মিশ্র অনুভূতি সবার মনে। প্রত্যেকের কাঁধে স্কুলব্যাগ। প্রয়োজনীয় উপকরণ আছে সব ব্যাগেই। খাবার পানি এবং হালকা নাশতাও। সন্তর্পণে হেঁটে হেঁটে খাদের কিনারায় পৌঁছে গেল সবাই। গর্তের ভেতরে আলো ফেললো ইফতু। অন্ধকার জগতের শান্তি বিনষ্ট করায় বেশ বিরক্ত ভেতরের অধিবাসীরা।
– ইঁদুর কিংবা তেলাপোকা ভীতি আছে কারো? অনেক সাহসী মানুষের কখনো কখনো ছোটখাটো বিষয়ে ফোবিয়া থাকে। কুসুম আপু হাত তুললেন।
– তেলাপোকা, তাই না? কুসুম আপু মাথা নাড়লেন।
– মোস্ট প্রবাবলি এখানে তেলাপোকা নেই। তবে চামচিকা আছে। বেশ কিছুক্ষণ আলো ফেলে রাখলো ইফতু। ভেতরের প্রাণীগুলোর হুটোপুটি স্তিমিত হয়ে গেলে তরতর করে মাটির সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল তিনজন। সাজিদ থাকলো বাইরে, পাহারায়। ইফতু আগেও দুবার এসেছে। ও চলে গেল সোজা লোহার কালো বক্সটার কাছে। এষা আর কুসুম ঘুরে ঘুরে দেখল পুরোটা।
– হ্যাঁ, নৌযানই এটা। তবে ডেক নয়। নিচের অংশ। কালো বাক্সটার গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলল কুসুম। বক্সটার না আছে কোনো ঢাকনা আর না আছে পাল্ল­া। লক কিংবা তালারও অস্তিত্ব নেই। বরং ভারী লোহার বস্তুটার নিচের অংশ নৌযানের নিচের লোহার সাথে ফিক্সড করা। পেছনের অংশও তাই। মূল বডির সাথে লাগানো। আঙুলের উল্টো পাশ দিয়ে আঘাত করল ইফতু। ফাঁপা কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না। হয় এটা নিরেট বস্তু নয়তো এর দেয়ালগুলো ভীষণ পুরু।
এষার চোখেই প্রথম ধরা পরল ছোট্ট চারকোনা জায়গাটা। কালো মাটির প্রলেপ দেয়া। নখে খুঁটে খুঁটে মাটিগুলো ফেলে দিলো এষা। ব্যাগ থেকে খাবার পানির বোতল বের করে ধুয়ে ফেলল জায়গাটা। তারপর চিৎকার করে উঠল, ইউরেকা!! সাজিদ দৌড়ে এসে ভেতরে আলো ফেললো। ওকে বলা আছে কোনো বিপদের আলামত দেখলে সে যেন ভেতরে আলো ফেলে। সাজিদ অনুচ্চস্বরে জানালো বাইরে কোনো বিপদ নেই, তবে ভেতর থেকে আরও আস্তে কথা বলতে হবে। কেননা চরের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে যেসব জেলে নৌকা চলাচল করছে, তাদের কথার আওয়াজ সাজিদের কানে আসছে। জিহ্বায় কামড় দিয়ে কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে
থাকলো এষা। উত্তেজনায় কাঁপছে ও। কুসুম আর ইফতু এসে দেখলো চারকোনা বক্সটা। আধুনিক ট্রলি ব্যাগ কিংবা ব্রিফকেসের মতো ডিজিটাল লক।
– ১৬০ বছর আগের কাহিনী, এতটা আধুনিক চিন্তা কিভাবে করেছে ওরা? মরিচা ধরা ডিজিটাল লকগুলোর ওপর কেরোসিনের ফোটা দিতে দিতে বিস্ময়ের সুরে বলল ইফতু।
– ভুলে যেও না, কামান বন্দুক রেলগাড়ি স্টিমার আবিষ্কার হয়ে গেছে তখন অলরেডি। কুসুম আপু বললেন।
পাজলগুলো আরবি সংখ্যার। এষা পড়তে পারে আরবি বর্ণমালা কিংবা সংখ্যা।
তৃতীয় স্ক্রিপ্টটা বের করলো ওরা। ‘পরম করুণাময় অসীম দয়ালু
আল্ল­াহর নামে শুরু করছি’ আন্ডারলাইন করা। তার মানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। ৭৮৬। সংখ্যাগুলো সাজাতেই ঘটাং করে একটা শব্দ হলো। খুলে গেল পাল্ল­াটা। কিন্তু একি! ভেতরে তো একই রকম আর একটা নিরেট বক্স। পাল্ল­াটা খুলেছে দুই সাইডের সংযোগ থেকে। অর্থাৎ পাল্ল­াটা বক্সের কর্নারে বলে ওরা এর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। আবারো একই রকম একটা ব্লক্স চোখে পড়ল ওদের।
দ্বিতীয় স্ক্রিপ্টে লেখা রয়েছে ‘দরুদ ও সালাম নবী মুহাম্মদের প্রতি যিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন’। মুহাম্মদ শব্দটায় আন্ডারলাইন করা। মিম-হা-দাল। মিম হচ্ছে ২৪, হা ৬ এবং দাল হলো ৮ । সংখ্যাগুলো ২৪৬৮ বিন্যাসে সাজাতেই আরেকটি পাল্ল­া খুলে গেল। উত্তেজনায় কাঁপছে ওরা।
তৃতীয় বাক্যটা হলো, ‘মুঘল সাম্রাজ্যের মহান স্থপতিকেও স্মরণ করছি’। স্থপতি মানে ফাউন্ডার বা প্রতিষ্ঠাতা।
– মুঘল সা¤্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে? তার নাম বলো। বললো এষা।
– বাবর। বা, বা এবং র । দুই, দুই তারপর দশ। ২২১০ শৃঙ্খলায় সাজাতেই খুলে গেল আর একটি পাল্ল­া। সবকিছু কেমন হিসেবমতো এগুচ্ছে। ভেতরে কিছু থাক বা না থাক এতটা সাফল্য আশা করেনি ওরা। পরের পাল্ল­াটা খুলল জাফরের নামের সংকেতে।
পরের পাজল বক্সে আর কোনো সংখ্যা নেই, আছে আরবি হরফ।
তৃতীয় স্ক্রিপ্টের দিকে তাকালো ওরা। কতগুলো সংখ্যা। তার মানে এবার সংখ্যাগুলোকে কনভার্ট করতে হবে হরফে। এ তো এক বিশাল সংখ্যা ১২৩২৭৬২০৫। নিশ্চয়ই মাঝে মাঝে স্পেস আছে। এই প্রথম একটুখানি গ্যাপ ধরা পড়লো কুসুম আপুর কাজে।
– ক্যামেরা ওপেন করো তো আপু ! ইমেজটা বের করো!
– হ্যাঁ, সত্যিই। সংখ্যাগুলোর মাঝে স্পেস আছে, বললেন কুসুম আপু মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রেখে। এবার যা দাঁড়াল তা হচ্ছে ১, ২৩, ২৭ মানে আলিফ-লাম-হা। আল্ল­াহ। আর ৬, ২০, ৫ মানে হা, ফা এবং জিম। হাফেজ। তিনজনে একসাথে চিৎকার করে উঠল আল্ল­াহ হাফেজ !! আবার গর্তের মুখে দৌড়ে এল সাজিদ। ইশারায় ওকে নিচে নামতে বলল কুসুম আপু। সবাই ঠোঁটে আঙুল চেপে আছে। সাজিদ আশেপাশে তাকিয়ে টুপ করে গর্তে নেমে এলো। দীর্ঘ সময় গর্তে অবস্থান করায় সবার শরীর ভিজে জবজবে হয়ে গেছে। উত্তেজনায় চিতা বাঘের মতো জ্বলছে সবার চোখ। সর্বশেষ অক্ষরটা মেলানোর সাথে সাথে ঘটাং করে খুলে গেল সর্বশেষ পাল্ল­াটাও। বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেল সবার মুখ। ভেতর থেকে শত শত সোনালি আলো ঠিকরে বের হচ্ছে। থরে থরে সাজানো
রুপার রিকাবি ভর্তি স্বর্ণমুদ্রা। ১৬০ বছরে একটুও লাবণ্য হারায়নি। আনন্দে ইফতুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলল এষা। এষার পেছন থেকে কুসুম আপু আর ইফতুর পেছন থেকে সাজিদ এসে সে বন্ধনকে আরো শক্ত করল।
হাতে একদম সময় নেই, বলল ইফতু । প্রতিটি পাত্রে কতগুলো স্বর্ণমুদ্রা আছে তা গুনে দেখারও টাইম নেই। একটি রুপার পাত্র ওজন করে মনে হলো ১০ থেকে ১২ কেজি হবে। প্রত্যেকটা ব্যাগে এক এক রেকাবি ঢেলে দিলো ইফতু। মুদ্রার সাথে মুদ্রার ঘর্ষণের শব্দ কানে মধুবর্ষণ করল ওদের। পাল্ল­াগুলো টেনে লাগিয়ে ডিজিটাল লকের সংখ্যাগুলো এলোমেলো করে দিলো ইফতু। রুপার খালি পাত্রগুলোও ভেতরে রেখে দেয়া হয়েছে। খুব বেশি সময় লাগেনি পাল্ল­াগুলো বন্ধ করতে। এখন খুলতেও খুব বেশি সময় লাগবে না, ভাবছে ওরা ।
– কোনো ধরনের চিহ্ন ফেলে যাওয়া যাবে না। বলল ইফতু। যেকোনো সময় চলে আসতে পারে মৃণাল সেন। সিন্দুক খোলার পাসওয়ার্ড না থাকলেও নৌযানের অবস্থানের নকশা আছে ওর কাছে। কে জানে ইতোমধ্যে একবার ঢুঁ মেরে গেছে কি না ।
স্কুলব্যাগে ১০-১২ কেজি জিনিস ক্যারি করা অস্বাভাবিক না হলেও যে কেউ খেয়াল করলে বুঝতে পারবে কিছু একটা রয়েছে ব্যাগে।
খুব সাবধানে গর্ত থেকে বের হয়ে এলো ওরা। বের হওয়ার আগে দুটো বিষয়ে শপথ করলো। লোভ করা যাবে না আর যৌথ সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই কাউকে জানানো যাবে না। গর্তে ঢুকেছিল চারটে নিঃস্ব কিশোর আর বের হয়ে এলো মিলিয়নিয়ার হিসেবে। ফুসফুস ভরে ফ্রেশ অক্সিজেন নিলো চারজনই। গর্তের কাছ থেকে সরে জঙ্গলের মাঝামাঝি চলে এলো ওরা। এখান থেকে চরের দক্ষিণ প্রান্তের জেলেদের কথোপকথন শোনা যায় না।
বের হবার পরিকল্পনাটা একটু অন্যভাবে করলো ইফতু। প্রথমে বের হয়ে এলো ও আর সাজিদ। আশেপাশে নজর রেখে এক ছুটে উঠে এলো বাঁধের ওপরে। নলখাগড়ার ঝোপ থেকে সাইকেল দুটো বের করে তিন রাস্তার মোড়ে চলে এলো। এখন যেকেউ দেখলে মনে করতে পারে স্কুল পালিয়ে পদ্মার পাড়ে হাওয়া খেতে এসেছে দুই বন্ধু। বেশখানিকটা বিরতি দিয়ে ওদের সাথে যুক্ত হলো এষা তারপর কুসুম। ওদের দুজনকে সাইকেলে তুলে দিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করল ইফতু আর সাজিদ।

সেজো মামা এসেছেন। বাড়ি তাই সরগরম। বছর পাঁচেক আগে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করে দেশান্তরী হয়েছেন ছোটমামা। নানীর মৃত্যুর সংবাদটাও পাননি তিনি। সেই মামা নাকি সেজো মামার সাথে যোগাযোগ করেছেন। বাড়ি ফিরতে চান। নানা ভাইয়ের গম্ভীর চেহারার ফোকর গলে খুশির ঝিলিক বের হয়ে আসছে।
পদ্মার ওপারে ইন্ডিয়া। মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর থানা। থানার উত্তর প্রান্তে পদ্মার চরে মাসে একবার সীমান্তহাট বসে। দুই দেশের লোকজন আসে স্ব স্ব দেশের পণ্য নিয়ে। কেনাবেচা হয়, ঘোরাফেরা হয় আর হয় দু’দেশের মানুষের সংস্কৃতির আদান প্রদান। বাড়ির পেছনে নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করছেন নবু মামা। হাটে বিক্রি করার জন্য বেশ কিছু পণ্য নিয়েছেন সেজো মামা। কুসুম আপু বাদে সবাই রেডি। ইফতুর ইশারায় শেষ মুহূর্তে পেট ব্যথার অজুহাত দিয়ে থেকে গেল এষা। পৌষের পদ্মা। নিতান্তই শান্ত তবে বিস্তৃত জলরাশি। পেটে পেটে জেগে উঠেছে চর।
– বুঝলে মামা, এক সময় এই নদীতে বড় বড় স্টিমার চলতো। যাত্রীবাহী মালবাহী সবধরনের জাহাজ। কলকাতা থেকে গোয়ালন্দ হয়ে ঢাকা চলে যেত। ইফতু জানে সবকিছু, তবু মামার কথা মুগ্ধ হয়ে শোনে। ভেতরে ভেতরে অন্য চিন্তা। মুদ্রা ভর্তি ব্যাগ দুটো সাজিদের খাটের নিচে। বাকি দুটো কুসুম আপুর রুমে। এত সম্পদ এত অর্থ পৃথিবীর কোনো চাওয়াই তো অপূর্ণ থাকবে না।
– কি রে সাজিদ, কী ভাবছিস? বোঝাই যায় ওর দৃষ্টি একদিকে আর চিন্তা অন্যখানে। হেসে ফেললো ও।
– তুমি যা ভাবছো, আমিও তাই ভাবছি। হেসে ফেলে দুজন। নানা ভাইয়া আবার ছোট মামার কথা জানতে চাইলে সেজো মামার সাথে গল্পে মেতে ওঠেন দুজন। সাজিদ আর ইফতু নবু মামার কাছে চলে আসে।
কি হে মামা, কেমন চলছে?
– ভালোই তো মামা। খাই দাই ঘুরি ফিরি। রাইত হইলে ঘুমাই। তয় একটা আক্ষেপ আছে। একটা ঘর বাঁধা হইলো না।
– সে কি মামা! কাউকে পছন্দ করতে পারোনি বুঝি ?
– সেই সৌভাগ্য কি আমার আছে যে ফুলবাবু সেজে ঘরে ঘরে কন্যা দেখে বেড়াবো? চাল নাই চুলা নাই আমার সাথে মেয়ে বিয়ে দেবে কোন বাবা ?
‘তোমার চাল চুলো হয়ে গেল,’ ইফতু আর সাজিদ মনে মনে ভাবে।
হাটে ঢুকে অবাক হয়ে গেল ইফতু। খেলনা, তৈজসপত্র আর ব্যবহার্য জিনিসে ভরপুর। প্রচুর লোকসমাগম হয়েছে হাটে। ওপাড়ের লোকজনের দৃষ্টি এপাড়ের পণ্যের ওপর আর এপাড়ের লোকজন কিনছে ওপাড়ের পণ্য। সেজো মামা কিছু পণ্য এনেছিলেন। নিমিষেই তা বিক্রি হয়ে গেছে। এপাড়ের খুচরো বিক্রেতারাই ওপাড়ের পণ্যের ক্রেতা। ইফতু আর সাজিদ একা একা ঘুরলো পুরো হাট। মনে হচ্ছে ব্যাগ ভর্তি করে কিনে নিয়ে যায় খেলনা, প্রসাধনী আর খাবার। কিন্তু পকেট যে গড়ের মাঠ।
– কোটি টাকার মালিক হয়েও আজ আমরা শুন্য হাতে ঘুরছি। তাহলে এইভাবে ধনী হয়ে লাভ কি? সাজিদের আক্ষেপ।
ফেরার আগে রেস্টুরেন্টে ঢুকলো ওরা। কচুরি আর রাবড়ির অর্ডার করে টেবিলে বসতেই কোত্থেকে এক লোক এসে মামার মুখোমুখি বসলো। কোনো রকমে ভণিতা না করে সরাসরি বললো, আপনি তো চৌধুরী সাহেবের নাতি, তাই না? আপনার বাবার কাছে বললে তো রাজি হবেন না, তাই আপনাকে বলছি। আপনাদের পদ্মায় জেগে ওঠা চরটা আমি কিনতে চাই। সাড়ে ১৫ একর জমি, তাই না? কত চান বলুন?
অষ্টপ্রহর অর্থ কষ্টে থাকা সেজ মামার চোখ, এমন সহজ অর্থপ্রাপ্তির প্রস্তাবে চকচক করে ওঠে। নানা চলে আসায় তড়িঘড়ি করে সেজো মামার মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে চলে গেল লোকটা। সাজিদ আর ইফতু গন্ধ পেল নতুন বিপদের।
চলবে…