২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যাকআপ ওপেনার কে?

মো. হাছিবুল বাসার

0
43

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ-২০২৩ আসরের আয়োজক দেশ ভারত। কিছুদিন আগেই বেশ ঘটা করে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের লোগোর উন্মোচন করেছে। যদিও বিশ্বকাপের বছরে আইপিএলের ভাটা পড়ার অনিশ্চিতায় এখনো খেলার সূচি প্রকাশ করেনি বিসিসিআই। তবে আইপিএল শেষে সূচি প্রকাশিত হওয়ার আভাস মিলেছে। ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বিশ্বকাপের মঞ্চ প্রস্তুতে গড়িমসি করলেও বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে উৎসবের ঘনঘটা বেজে গেছে অনেক আগেই। কাকে রেখে কাকে খেলাবে এসব ব্যস্ততা নিয়েই দিন পার করছে। সবচেয়ে মধুর প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে ব্যাকআপ ওপেনার কে হবেন সেই প্রশ্নে। সবকিছু ঠিক থাকলে তামিম-লিটন জুটি যে ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সূচনাকে রাঙাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এদের কেউ ইনজুরিতে পড়লে ব্যাকআপ ক্রিকেটার হিসেবে স্কোয়াডে কাকে রাখা হবে। সেই শূন্যস্থান পূরণে বিসিবির ভাবনায় আছেন চার ক্রিকেটার। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তাদের সম্ভাবনা নিয়েই ক্রীড়াজগতের এই আয়োজন।

এনামুল হক বিজয় : ধারাবাহিক পারফর্মার এনামুল হক বিজয়। বাংলাদেশের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞতায় ঠাসা পরিচিত মুখ এনামুল হক বিজয়। গত ডিপিএল আসরে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে করেছিলেন এক আসরে সর্বাধিক রানের রেকর্ড। ১৫ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি ও ৯টা পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের মাধ্যমে ৮১ গড়ে ৯৮.০০ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন ১১৩৮ রান। এমন বিরল রেকর্ড গড়ে ২০২২ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে ফিরেছিলেন জাতীয় দলে। প্রথম ওয়ানডে, দ্বিতীয় ওয়ানডে ও তৃতীয় ওয়ানডেতে করেছিলেন যথাক্রমে ৭৩, ২০ ও ৭৬ রান। তবে ভারতের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তিনটি ওয়ানডেতে ১৪, ১১ ও ৮ রানের হতশ্রী ইনিংস খেলে বাদ পড়েছেন। তবে তিনি যে অদম্য, তিনি যে রানের ক্ষুধায় মত্ত তা আবারো প্রমাণ করেছেন এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে। আবাহনীর হয়ে মাঠে নেমে ১৪ ম্যাচে প্রায় ৬০ গড়ে ৯৯ স্ট্রাইকরেটে করেছেন লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭১৯ রান। পেয়েছেন ৩ টি সেঞ্চুরি ও ২ টি অর্ধশতের দেখা। এমন উজ্জ্বল পারফর্মেন্সকে নির্বাচকরা নিশ্চয়ই খাটো করে দেখছেন না। আবার কোচ হাথুরুসিংহে মারকুটে এ ব্যাটারকে দলে নিয়ে বিশ্বকাপ স্কোয়াড সাজাতে পারেন!

জাকির হাসান : ইনজুরিকে জয় করে বাজিমাত জাকির হাসানের চোটে আক্রান্ত না হলে হয়তো জাতীয় দলের সঙ্গে এখন ইংল্যান্ডে আয়ারল্যান্ড সিরিজে থাকতেন জাকির হাসান। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আঙুলের ইনজুরির কারণে দেড় মাস তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। তবে জাকির তো থেমে থাকার পাত্র নয়। মাঠে ফিরেই প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে মাঠে নেমে হাঁকিয়েছেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। বিকেএসপিতে সুপার লিগের প্রথম দিনের ম্যাচে ১০৬ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন জাকির। এটা ছিল লিস্টে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। গত ডিসেম্বরে ভারতের বাংলাদেশ সফরে অভিষেক ম্যাচে অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করে এসেছিলেন আলোচনায়। গত ডিপিএলের আসরে ১৫ ম্যাচে ৬৩৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ছিলেন চতুর্থ। অমিত সম্ভাবনাময় এ ক্রিকেটার আপাতত ইনজুরির কারণে দলের বাহিরে থাকলেও কোচের ভাবনায় আছেন বেশ ভালোভাবেই।

রনি তালুকদার : টি-টুয়েন্টির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন রনি তালুকদার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আট বছর পর টি-টুয়েন্টি দলে ফিরেছিলেন রনি তালুকদার। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে রনি গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৬১ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলে এসেছিলেন আলোচনায়। আলোচিত ওপেনার জাকির হাসান চোটে পড়ায় এই ওপেনার ডাক পেয়েছিলেন ওয়ানডে দলেও। এই সুযোগে আয়ারল্যান্ডে সফরে অভিষেক হয়। তবে আসন্ন বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ম্যাচে ভালো পারফর্ম করলে। বিশ্বকাপের ভাবনায় রনি এগিয়ে থাকবেন তাতে সন্দেহ নেই।

নাঈম শেখ : নাঈম শেখ নিজেকে চেনাচ্ছেন নতুনভাবে নি®প্রভ থেকে সপ্রতিভ। নাঈম শেখ সম্ভবত এই পথেই হাঁটছেন। গত বছরের এশিয়া কাপের পর থেকে কোনো দৃশ্যপটেই ছিলেন না। কিন্তু এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে(ডিপিএল) শুরু থেকেই ঝলকানি দেখাচ্ছেন নিজের ব্যাটিং আগ্রাসনে। এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ৮ টি অর্ধশতকের মাধ্যমে ৭৩ গড়ে ৯২ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ৮০৩ রান। জাতীয় দলে ওপেনিংয়ের জায়গাটা তামিম-লিটনের জন্য অনেকটাই পাকাপোক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে টপ অর্ডারে ভালো করছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। নির্বাচকদের করা ২৪ জনের পুলে হয়তো বা থাকবেন নাঈম শেখ; তবে চ‚ড়ান্ত দলে সুযোগ পাওয়াটা কঠিনই হবে আবাহনীর এই ওপেনারের জন্য। তবে এমন ফর্মে থাকা বিকল্প টপ অর্ডার ব্যাটার যে বড় টুর্নামেন্টে দলের বেঞ্চের শক্তিমত্তাকে বাড়িয়ে দেবে অনেকটাই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।