দুজন লোক, খুবই পিপাসার্ত। নাম মেল্টু আর কেল্টু।
কেল্টু বলল, লাগছে খুবই পিপাসা ভাই, কিন্তু পানির নিশানা নাই।
মেল্টু বলে, চল পানি কিনে খাই, কিন্তু কোথাও পানির দোকান নাই। আমাদের ভাগ্যটাই খারাপ।
কেল্টু বলল, ওই দ্যাখ ডাবের দোকান! ডাবের পানি খাই!! তাই তারা আবৃত্তি করল,
‘ডাবের গাড়ি, ডাবের গাড়ি কোথাও নাহি যাও,
যাওয়ার আগে আমাকে ডাবের পানি দিয়ে যাও।
দুজনেই দৌড়ে গিয়ে কেল্টু বলল, তাড়াতাড়ি দুইটা পানিওয়ালা ডাব দেন তো!
– পানিওয়ালা ডাব ১০০ টাকার।
– কি বলেন!! ১০০ টাকার আবার ডাব হয় নাকি!
– হয় না মানে। এছাড়া এ এলাকায় অন্য ডাবের গাড়ি পাইবেন না। আর পাইলেও পানিওয়ালা ডাব তো পাবেনই না! এদিকে পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছে। ওরা পকেট থেকে ২টা ১০০টাকার নোট বের এগিয়ে দিয়ে আর বলল, আচ্ছা দেন, বাধ্য হয়ে নিচ্ছি।
ডাবওয়ালা নিচে রাখা একটা গামলা থেকে বড়সর দুটো ডাব বের করতে দেখে তাদের সন্দেহের বশে বলল, গামলার মধ্যে ওটা কী? আর ওখান থেকেই বা বের করছেন কেন? উপরেই তো কতো ডাব আছে।
ডাবওয়ালা একটু ইতস্তত হয়ে বলল, না, মানে এগুলোই পানিওয়ালা ডাব আর ওটার ভেতর রাখলে পানি শুকায় যায় না!
ডাব খেয়ে দুজনে হেঁটে কিছুদূর যাওয়ার পর কেল্টু অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। কেল্টুকে দেখতে গিয়ে মেল্টুও ধপাস হয়ে পড়ে গেল। ডাবওয়ালা দেখেও না দেখার ভান করল। কিন্তু এই ঘটনাটা দেখে ফেলল এক পুলিশ। তাদের কয়েকজন এসে কেল্টু আর মেল্টুকে এম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে গেল।
পুলিশ এসে ডাবওয়ালাকে বলল, এই যে।
আমি দেখলাম অজ্ঞান হওয়ার আগে আপনার কাছ থেকে ওরা ডাব খেয়েছে। ডাবে কি কিছু মিশিয়েছেন নাকি? তাকে প্রচ- ঘামতে দেখে পুলিশ আরো রাগি গলায় বলল, কী হলো? কিছু বলছেন না যে? ডাবওয়ালা এবার কাঁপা গলায় বলল, কই না তো কিছুুই মেশানো ছিল না!
পুলিশ বলল, তাহলে একটা ডাব নিজে খেয়ে দেখান তো! সে বলে না! আমি কেনো ডাব খাবো?
পুলিশের ভয়ে সে ডাব নিতে বাধ্য হয়ে ওপর থেকে একটা ছোট-খাট ডাব নিতে লাগছিল আর পুলিশ তখনই বললেন, নিচে গামলার ভেতরের ডাব খেতে হবে। এতে সে একেবারে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। ডাব একটু কেটে তাতে স্ট্র লাগিয়ে সামান্য গিলার পরই একেবারে মাথা ঘুরে পড়ে গেল। জ্ঞান ফিরলে তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেল, তাতে ডাবে ফরমালিন মেশানো ছিল।
আমাদের দেশে অনেক জায়গাতেই এরকম খাবারে ফরমালিন মিশিয়ে বিক্রি করে। ডাব ছাড়াও অন্যান্য সকল ফলমূল, মাছ এবং বেশির ভাগ খাদ্যদ্রব্যেই ফরমালিন নামক বিষ মিশিয়ে ব্যবসা করছে। এতে সকলেই নানাভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকা প্রয়োজন।
স্কয়ার স্কুল অ্যা- কলেজ, পাবনা