এক.
ঢং ঢং ঢং। স্কুল ছুটির শব্দ। সবাই আনন্দে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছে। অন্যদের মতো শাহিনও স্কুল থেকে বের হলো। নন্দিনাপুর থেকে আনন্দপুর যাওয়ার পথে একটি বড় ইটের ভাটা পড়ে। শাহিন বাড়িতে যাবার পথে দেখল একটি শিশু ইট মাথায় করে পোড়াতে নিয়ে যাচ্ছে। শিশুটির বয়স ৮ বা ৯ বছরের বেশি হবে না। তার ইটগুলো ওঠাতে অনেক কষ্ট হচ্ছিল। তার জন্য শাহিনের অনেক দুঃখ হলো। যে বয়সে তার খেলাধুলা ও লেখাপড়া করার কথা সে বয়সে কিনা সে কাজ করছে! কত অল্প বয়সে সে শিশুশ্রমের শিকার! সাধারণত দরিদ্রতা বা পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে অনেক সময় শিশুরা স্কুলে না গিয়ে বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ১৮ বছরের কম বয়সি কোনো শিশু যদি উপার্জন করতে গিয়ে বিপদ, ঝুঁকি, শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয় তাহলে সে কাজকে শিশুশ্রম বলে। শিশুরা এছাড়াও গাড়ির হেলপার, গৃহকাজে সহায়তাকারী হিসেবে ও ব্যবহার করা হচ্ছে । যা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত। শাহিন সিদ্ধান্ত নিলো সে শিশুশ্রম বন্ধ করবে।
শাহিন নন্দিনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তাই সে শিশু অধিকার লঙ্ঘন করায় চুপ করে বসে থাকার নয়।
দুই.
পরের দিন। সে তার বন্ধুদের শিশুশ্রমের ক্ষতি সম্পর্কে কথা বলছিল। সে তার পরিকল্পনা সম্পর্কে তাদের বলল। তারা সিদান্ত নিলো তারা পরের দিন মানববন্ধন করবে।
এর পরেরদিন, তারা সবাই মানববন্ধন করেছিল। এ মানববন্ধনে প্রায় এক হাজার এর মতো মানুষ হয়েছিল। এ মানববন্ধনে অনেক ছোট শিশু ও আসে। তারা সে ইটের ভাটার মালিককে শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য বলে। কিন্তু সে শিশুশ্রম বন্ধ না করে তাদের হুমকি দিতে থাকে।
এ বড় ঘটনার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা পরেরদিন, শিশু মন্ত্রী শাহিনের সাথে দেখা করলেন। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। তিনি আরও বলেন- “তারা শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য কাজ করছেন। জনগন যদি সচেতন হয়, তাহলেই শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। যদি কোথাও শিশুশ্রম হয় তাহলে ১০৯ এ কল দিবেন। শিশুশ্রম যাতে না হয় তার জন্য সকল গরিব পরিবারকে সহযোগিতা করার উদ্দ্যেগ নিয়েছেন।”
আমরা ও আছি সেই শাহিনের সাথে শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য।