রমজান প্রায় শেষের দিকে। আর কয়েক দিন পরেই ঈদুল ফিতর। চতুর্দিকে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। খোকাও সবার মতো নতুন জামা কিনবে। আব্বু-আম্মুকে আগ-থেকেই বলে দিয়েছে এবারের ঈদে ওকে দুটো পাঞ্জাবি কিনে দিতে হবে। একটি নিজের জন্য, আরেকটির কথা কাউকে এখনো বলেননি। ওর কথামতো ঠিক দুটো পাঞ্জাবিই কিনে দিলেন। খোকা তো আনন্দে আত্মহারা, অন্তরে খুশির জোয়ার।
ঈদের আর মাত্র দু’দিন বাকি। পাশের বাড়ির রাকিব এখনো কিছুই কিনতে পারেননি। ওর আব্বু সামান্য একজন কৃষক, প্রতিদিনের আয় দিয়ে খাবার যোগাড় করতেই খুব কষ্ট হয়, বিলাসিতা করা আর হয়ে ওঠে না।
দুঃখের কথা কাউকে বলতেও পারে না, অশ্রুভেজা চোখে বসে আছে নদীরধারে। মাঝে-মধ্যে চিৎকার করে বলে- হে আল্লাহ, আমাদের কেনো গরীব বানিয়ে পৃথিবীতে পাঠালে?
কেনো আমাদের জীবনে এত কষ্ট? ভাত পেলে কাপড় পাই না, কাপড় পেলে ভাত পাই না! নিয়তির লিখন কেনো এত নিষ্ঠুর?
আবার নিজেই নিজেকে সান্তনা দেয়Ñ পৃথিবীর সবাই যদি ধনী হতো, সবাই যদি প্রভাবশালী হতো, হয়তো তখন আর কেউ কাউকে মূল্য দিতো না। সবাই নিজের মতো করে চলত, কেউ কারো কোনো কাজে আসত না। এতে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা লেগে থাকত। হয়তো আল্লাহ তাই ধনী-গরীব সৃষ্টি করেছেন।
পেছন থেকে হঠাৎ খোকা আসলো। হাতে শপিং ব্যাগ। বললÑ এটা তোমার জন্য আমার পক্ষ থেকে সামান্য উপহার। খোকার দুটো পাঞ্জাবি থেকে একটি রাকিবকে উপহার দিয়ে দিলো। এই মহান উদারতা দেখে রাকিব তো অবাক! এবং খুবই আনন্দিত। নতুন জামা পেয়ে রাকিবের মুখে তৃপ্তির হাসি। একটি পাঞ্জাবি উপহার দিয়ে খোকা যে নজির পৃথিবীতে স্থাপন করলো তা খুবই প্রশংসনীয়। সবাইকে বুঝয়ি দিলো মানুষ মানুষের জন্য। দূর করলো ধনী-গরীবের ব্যবধান। বুঝিয়ে দিলো ঈদ মানে সবার মুখে হাসি ফোটানো।
শিক্ষার্থী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ