বুড়ো দাদার কাণ্ড

ফারিহা জান্নাত তুহফা

0
38

ছোট্ট একটি গ্রামে বাস করতেন এক বুড়ো দাদা। বুড়ো দাদা ছিলেন খুবই খিটখিটে ও বদ মেজাজী। নিজে দোষ করে অন্যকে দোষারোপ করতেন।
একদিন তিনি বাজারে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। ভাবলেন গিয়ে একটু পান খেয়ে আসি। বাজারে যাওয়ামাত্রই ছোট ছেলেরা তাকে দেখে হাসতে লাগল। বুড়ো দাদার মেজাজ বেশি খিটখিটে এটা সবাই জানতো। তাই ওরা হাসাহাসি করলেও তার কারণ বললো না। আরেকটু যাওয়ার পর তার বড় নাতির বয়সী ছেলেরাও তাকে দেখে হাসতে লাগলো। মজা করে বলল, ‘দাদা কেমন আছেন?’ তাদের মুখ হাসি হাসি, যেন হাসি আটকাতেই পারছে না তারা। দাদা রেগেমেগে গজরাতে গজরাতে বাজারে ঢুকলেন। বললেন, বজ্জাত ছেলেরা আমি বুড়ো বলে আমায় দেখে হাসছে। মনে হচ্ছে তারা কখনো বুড়ো হবে না।

বাজারে ঢুকতেই তার ছেলের বয়েসি লোক, যারা তাকে সালাম করতো তারাও তাকে দেখে হাসছে। তা দেখে দাদার মাথা আরও গরম হয়ে গেলো। পানের দোকানে গেলেন, সেখানে ছোট একটি ছেলে তার বাবার সাথে বসে ছিলো- সেও হাসতে লাগল। দাদা অবাক হয়ে লক্ষ করলেন, ছেলেটার সাথে বাবাও মিটিমিটি হাসছে। তা দেখে রাগে কটমট করতে করতে বললেন, ‘যা, তোর দোকান থেকে আর কিছু কিনবোই না।’
বাড়ি আসলেন, উঠোনে তার বড় ছেলে দাঁড়ানো ছিলো। দেখলেন সেও তার দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে হাসছে। তারপর বুড়ি দাদি তার দিকে তাকালেন, তাকিয়েই একটা হাসি…। দাদা চেঁচিয়ে বললেন, কেন? কেন আজ সবাই আমাকে দেখে এভাবে শুধু হাসছে? ব্যাপার-স্যাপার বুঝলামনা। ঘরে যখন ঢুকলেন, তখন তার ছেলের বউয়েরাও হাসতে লাগল। আঁচলে মুখ লুকিয়ে লজ্জায় চলে গেল তারা।

বারান্দায় ছোট ছোট নাতি নাতনিরা ছিলো, তারাও হাসতে লাগল। আর বললো, দাদু তোমার পায়ের জুতার দিকে একবার তাকাও বলেই আবার জোরে জোরে হি হি করে হাসতে লাগলো। তখন দাদা তার জুতার দিকে তাকিয়ে দেখলেন, নিজের একটা জুতা আর বুড়ি দাদির একটা জুতো পরে তিনি পুরো বাজার চক্কর দিয়ে এসেছেন। এতক্ষণে পুরো ব্যাপার বুঝতে পারলেন, বুঝলেন কেন সবখানে সবাই তাকে নিয়ে এত্তো হাসাহাসি করছিলো। এবার তিনিও যোগ দিলেন হাসিতে। তার হাসা দেখে বাড়ির সবাই হাসতে হাসতে খুন।